পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের কপিলা চরিত্র বিশ্লেষণ।

পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের কপিলা চরিত্র

কপিলা চরিত্র বিশ্লেষণ:

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসে বড় ধরনের প্রভাব বিস্তারকারী এক চরিত্র হলো কপিলা। যেই কপিলার মন কখনো বোঝা যায় না।

এই উপন্যাসের একজন গরীব-দুঃখি মাঝির নাম কুবের। কুবেরের স্ত্রী মালা। মালা পঙ্গু, তবু কুবেরের দিক হতে মালার জন্য ভালোবাসার কমতি নেই। এই মালার বোন কপিলা।

কপিলার স্বামী আছে কিন্তু সেখানে সতীনের ঘর। তাই স্বামীর সাথ রাগারাগি করে কপিলা বাবার বাড়ি চলে এসেছে।

অন্যদিকে কেতুপুর গ্রামে কুবেরের বাড়ি। মালার মেয়ে গোপীর পায়ে সমস্যা হবার কারনে কপিলা দীর্ঘদিন বোনের বাড়িতে থেকে তাদের কাজকর্মে সহযোগীতা করে। গোপীর অসুস্থতা বেড়ে গেলে শহরের মেডিকেলে গোপীকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কুবেরের সাথে কপিলা সহ আরো অনেকেই  যায়।

কিন্তু মেডিকেলে রাতে থাকার ব্যবস্থা না থাকায় কুবের কপিলা ও অন্যদের  বলে বাড়ি চলে যেতে। কিন্তু কপিলা যায় না।কপিলার মন কুবের বুঝতে পারে না যে কেন কপিলা যেতে চাই না।বাস্তবিক কপিলা হয়তো চাই কুবেরের সাথে রাত কাটাতে। হয়েছিলো  তাই।মেডিকেলে ব্যবস্থা না থাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে আমিনবাড়িতে কুবের ও কপিলা রাত কাটিয়েছিলো।

অনেক দিন পর কপিলার সতীন মারা গেলে তাঁর স্বামী তাকে নিতে আসে এবং কপিলা হন হন করে  স্বামীর বাড়িতে চলে যায়। একদা কুবের কপিলার প্রতি আকর্ষিত হয়ে কপিলার বাড়িতে যায়। কিন্তু কপিলা সেখানে আর কুবেরকে প্রশ্রয় দেয় না। কুবেরকে ফিরিয়ে দেয় কপিলা।

আবার,কপিলা বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে খবর পেয়ে কুবের তার ছেলে মেয়ে নিয়ে শশুর বাড়িতে যায়। সেখানে মেলার দিনে কাদা মাখা শরীর নিয়ে কুবের পুকুরে স্নান করতে গেলে কপিলা তা বুঝতে পেরে,কুবেরের প্রতি আকর্ষিত হয়ে একটি কলস কাখে নিয়ে পুকুরে যায় এবং পানিতে নেমে পড়ে।কুবের তখন কপিলাকে জড়িয়ে ধরলে কপিলা ছেড়ে দিতে বলে। এখানেও কপিলার মনে কি চাই তা বোঝা যায় না।

চুরির দায়ে কুবেরের সমস্যার সৃষ্টি হলে হোসেন মিয়া তাকে বাঁচাতে চাই এবং ময়নাদ্বীপে নিয়ে যেতে চাই। সেখানেও স্বামী-সংসার ছেড়ে কুবেরের সাথে কপিলা ময়নাদ্বীপে যেতে চাই।কপিলার চরিত্র নিয়ে অনেক ‍সমালোচক অনেক ধরনের মন্তব্য করেছেন বটে কিন্তু আসলে কপিলার মনে কি চাই সেই রহস্য কোন পাঠকের/সমালোচকের পক্ষে উন্মোচন করা সহজসাধ্য নয়।

মূলত এই কপিলা চরিত্র একধরনের অসামাজিক ও বর্বর চরিত্র হিসেবে বিবেচিত।

অন্যান্য বিষয় পড়তে নিচে ক্লিক করুন –

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাস রিভিউ (অস্তিত্ববাদী,মনস্তাত্ত্বিক,চেতনা প্রবাহ রীতি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *