বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত পথের পাঁচালী উপন্যাস (1929) বাংলা সাহিত্যে এক অদ্বিতীয় উপন্যাস।
বিভূতিভূষণ কে প্রকৃতির কাব্যকার বললে হয়তো অন্যায় কিছু হবে না, যদি আমরা সর্বদাই মনে রাখি যে প্রধানত তিনি মানুষের ইতিহাস রচয়িতা মানুষের সুখ-দুঃখের পাঁচালী তার সাহিত্যের প্রধান উপজীব্য তাই তার চরিত্র চিত্রণ বৈশিষ্ট্যই আমাদের কাছে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক বলে মনে হয়।
বিভূতিভূষণের এই উপন্যাসের নারী চরিত্র গুলো অসাধারণ নয়। সবাই অতিসাধারণ, অশিক্ষিত ও সরল স্বভাব।
শহরের জীবন এবং শহুরে মানুষকে শিল্পবস্তু হিসেবে বিভূতিভূষণ বিশেষ মর্যাদা দেননি। তাঁর সাহিত্য সৃষ্টি প্রায়ই সমগ্রভাবে পল্লী কেন্দ্রিক। বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী অত্যন্ত সাদামাটা একটা মামুলি কাহিনী। বাংলাদেশের পল্লী গ্রামের এক দরিদ্র গৃহস্থ পরিবারের অতিসাধারণ সুখ-দুঃখ আশা-নিরাশার করুন মধুর ঘরোয়া একটি গল্প মাত্র।
Barbara Bray বলেছেন,
“গ্রন্থের প্রধান উপজীব্য হল একটি দরিদ্র ও নিপীড়িত পরিবারের দুঃখ দুর্দশার কাহিনী “
আবার আমেরিকার ‘Choice’ পত্রিকার সমালোচক দেখতে পেয়েছেন যে শুধু-
’’ভারতীয় পল্লীজীবনের নিষ্ঠুর যন্ত্রণার নিরাবরণ বর্ণনা ‘’
মূলভাব :
পথের পাঁচালী উপন্যাসখানিকে লেখক তিনটি পর্বে ভাগ করেছেন এবং তাদের নামকরণ করেছেন -বল্লালী বালাই, আম আঁটির ভেঁপু ও অক্রর সংবাদ। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পাঁচটি।যথা- ইন্দ্রিয়ের ঠাকুরন ,হরিহর, সর্বজয়া ,অপু ও দুর্গা ।এছাড়াও রয়েছে বেশকিছু অপ্রধান চরিত্র ।সমস্ত চরিত্র বহন করেছে পুরো ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের জীবন কাহিনী ।আবার এই চরিত্রগুলোর দারাই তুলে ধরা হয়েছে সমস্ত ভারতবর্ষের মানুষের সুখ ও দুঃখের কাহিনী। নিম্নে কিছু চরিত্রের বিশ্লেষণ করে তা দেখানো হলো।
পথের পাঁচালী উপন্যাসের ইন্দির ঠাকরুন চরিত্র:
কিংবদন্তি আছে যে আমাদের দেশে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন করেন রাজা বল্লাল সেন। সেই প্রথা অনুযায়ী একজন কুলীন অনেক কন্যার পানি গ্রহণ করতে পারতেন ।এসব কলীনরা বহুবিবাহ করে একেক শ্বশুর বাড়ি আসতেন এবং মোটা পাওনা গন্ডা আদায় করে পরের দিন আরেক শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান নিতেন ।
স্ত্রীরা যে যার বাপের বাড়িতেই অবস্থান করতো । পিতা মাতার মৃত্যুর পর এদের দুদর্শার অবধি থাকত না। ভাইয়ের অথবা কোন আত্মীয়ের বাড়িতে দু’মুঠো ভাতের জন্য পড়ে থাকত। ইন্দির ঠাকরুন এমনই কোন মহা কুলীনের অন্যতম পত্নী ।
বল্লাল সেন এর প্রতিষ্ঠিত যুপকাষ্ঠের অন্যতম বলি তিনি। পথের পাঁচালীর বল্লালী বালাই তিনিই।একটা মেয়েলি কথা আছে- অল্প দুঃখে কাতর ,অনেক দুঃখে পাথর ।কথাটা ইন্দির ঠাকরুন সম্বন্ধে বড় মর্মান্তিক সত্য ।
বহু দুঃখ বেদনার আগুনে পুড়ে আজ সে মানসিক স্থাবরত্বে এসে পৌঁছেছে ।এই 75 বছরের বৃদ্ধা বেঁচে আছে শুধু নিশ্চিন্দিপুরের অতীত ইতিহাসের একমাত্র সাক্ষীরূপে ।
ঘরে-বাইরে অপমান ও হেনস্থা । শুধু দুর দুর ছাই ছাই। যে হরিহরকে সে এত ভালবাসে তার বউ সর্বজয়া তাকে দু চোখে দেখতে পারে না। দুবেলা তাকে নানা রকম অকথা -কুকথা বলেন ।সবই আজ যেন তার গা সওয়া হয়ে গেছে ।দুঃখ ছাড়া জীবনের কাছে তার যে আর কিছু প্রাপ্য থাকতে পারে সে কথা আজ সে একেবারেই ভুলে গেছে। এই ইন্দির ঠাকরুন চরিত্রের মাধ্যমে সমগ্র কৌলিন্য প্রথার শিকার দুঃখ-দুর্দশা গ্রস্থ অসহায় মানুষদের চিত্র সুনিপুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে ।
পথের পাঁচালী উপন্যাসের হরিহর চরিত্র:
পথের পাঁচালী উপন্যাসের এক ভিন্নধর্মী পুরুষ চরিত্র হচ্ছে হরিহর ।দুঃখ-দুর্দশা গ্রস্থ এই ব্রাহ্মণ সন্তান কালক্রমে একটি সংসারের মধ্যে নিজেকে গৃহস্বামী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন ।হরিহরের জীবন ও চরিত্র বিবর্তনের রেখায় আভাসিত ।প্রথম জীবনে হরিহার ছিল এক উদাসীন মানুষ ।
হরিহর আশা- মরীচিকার ছলনায় বারবার বিভ্রান্ত হয় কিন্তু কিছুতেই তার শিক্ষা হয়না ।এইবার ঠিক একটা কিছু হয়ে যাবে, শীঘ্রই সুদিনের মুখ দেখতে পাবো
”এত কষ্ট ,এত অভাব আর থাকবে না।”
আশার তার অন্ত নেই কিন্তু কিছুই হয় না ।সুদিন আসে না। অভাব ঘোচে না। কিন্তু হরিহরের অপরাজেয় আশাবাদে একটু টোল খাইনা ।সংসারের অভাব অনটন দূর করার লক্ষ্যে ছেলেমেয়েদের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেবার আশায় কর্মের জন্য এখানে সেখানে নিত্য ঘুরে বেড়ায়। একসময় নিশ্চিন্দিপুর গ্রাম ছেড়ে উন্নত জীবনের আশায় পরিবার নিয়ে কাশিতে চলে যায়। কিন্তু কাশিতে গিয়েও অবস্থার পরিবর্তন আনতে পারেননি ।শোচনীয় দরিদ্রের মধ্যেই তার জীবনাবসানের হয়েছিল
তার বাউন্ডুলে প্রায় যাযাবর জীবনের মধ্যে এমন একটা কিছু আছে যা আমাদের সহানুভূতি ও করুণা আকর্ষণ করে । হরিহরের মত এমন হাজারো পুরুষ আছে যারা একটু সুখের খোঁজে সারা জীবন ছুটে বেড়ায় কিন্তু সুখের আগেই তাদের এ জীবনাবসান ঘটে ।হরিহর চরিত্র দ্বারা এমন দুঃখ দুর্দশাগ্রস্ত সমস্ত মানুষের চিত্র আঁকা হয়েছে
পথের পাঁচালী উপন্যাসের সর্বজয়া চরিত্র :
হরিহর -সর্বজয়ার সংসার দারিদ্র্যের সংসার ।অভাব-অনটন দুঃখ-কষ্ট তাদের নিত্যসঙ্গী ।সংসারের সমস্ত কষ্ট পোহাতে হয় সর্বজয়াকে। সেই সংসারের সব খানে জুড়ে আছে। তাই পথের পাঁচালীর সেই সবচেয়ে ট্র্যাজিক চরিত্র সর্বজয়া।পথের পাঁচালী উপন্যাসে শ্রেণী শোষন ও নিরন্ন মানুষের হাহাকার প্রধূমিত হয়েছে ।সর্বজয়ার জা সুনীলের মায়েরা সাথে তিনি ভাবতাম আবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি কারণ সুনীলের মা ধনী ।তাদের অনেক পয়সা আছে ।সুনীলের মা সর্বজয়া কে একেবারে মানুষ বলেই মনে করেন না। সর্বজয়ার স্বামী মারা যাবার পর মানুষের বাড়িতে কাজ করে চলতে হয়েছে । বামুন ঠাকুরন সর্বজয়া। ব্রাহ্মণের হাতের রান্না পবিত্র ।সর্বজ্ঞ রন্ধনশালায় সর্বজয়া সেই কাজটি করেই বাবুদের তৃপ্ত করেন কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতির দিক থেকেও এ ধনী বাবুরা সর্বজয়ার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন নি ।এখানে কাজেরই কদর মানুষের নয় ।খাটিতে খাটিতে মুখে রক্ত উঠে কিন্তু এখানে খাটার মূল্য নাই ।
স্বামী না থাকায় সন্তানরা ক্ষুধায় কান্না করেছে। বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়িয়েছে ফলমূলের সন্ধানে ।কিন্তু সর্বজয়া তাদের ভালোমতো খেতে দিতে পারেননি ।দুর্গার অসুখ হয়েছে কিন্তু ডাক্তার নাই, ঔষুধ নাই, পথ্য নাই ।দুর্গাকে কিছু খেতে দিতে পারেনি ।সর্বজয়া ওল শাক, কচু শাক সিদ্ধ করে খেয়েছে । নিজে উপবাসের পর উপবাস থেকে ঘরে সামান্য যেটুকু ছিল তা ছেলে মেয়ে দুজনকে খাইয়েছে । অভাবে পড়ে শেষ পর্যন্ত নিবারণের মায়ের কাছে বাড়ীর পুরনো বৃন্দাবনী চাদর বিক্রির প্রস্তাব করেছে। বর্ষায় ঘরের দেয়ালে পানি পড়ে সর্বজয়া রান্নাঘরের ও দেয়াল পড়ে যায় ।্শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয় সর্বজয়া আসলে আমাদের সমাজের অত্যাচারিত অসহায় দুঃখী নারীর প্রতিক যাদের সমগ্র জীবন কাটে ব্যথা-বেদনা আব্বুকে নিয়ে সংগ্রাম করতে করতে
পথের পাঁচালী উপন্যাসের দুর্গা চরিত্র :
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন যে তিনি প্রথম পথের পাঁচালী লেখেন তখন তাতে শুধু অপু ছিল দুর্গা ছিল না। আমাদের পক্ষে অবশ্য আজ দুর্গাহীন অপুকে কল্পনা করাও দুঃসাধ্য ।দুর্গা চরিত্রটি পথের পাঁচালীর জীবন্ত ও উশৃংখলতাপূর্ণ একটি চরিত্র । দুর্গা বড় অযত্নে অবহেলায় বেড়ে উঠেছে। সে যা চেয়েছে তা পাইনি ফলে আম,জাম, নারিকেল ,নোনা ফল ,কলা, খেজুর, জামরুল প্রভৃতি বন থেকে জোগাড় করে আবার কখনো বা চুরি করে খেয়েছে ।দুর্গার গোপনে আম চুরি করাকে কেন্দ্র করে সেজ বউ সর্বজয়া কে খোটা দিয়েছ আবার টুনুর পুতুলের বক্স থেকে পুতির মালা চুরি এবং মুখুজ্জে বাড়ির আত্মীয় টুনির মা হাসির সোনার সিঁদুরের কৌটা চুরি অপ্রাপ্ত ও বঞ্চিত কিশোরী মানুষের বহিঃপ্রকাশ ।
পারিবারিকভাবে দুর্গাকে বঞ্চিত করা হয়েছে ।মেয়ে বলে তাকে লেখাপড়া শেখানো হয়নি ।ভালো খাবারটুকু, ভালো ব্যবহার ও ভবিষ্যৎ স্বপ্ন সবটুকু আন্দোলিত হয়েছে অপুর জন্য ।সংসারের উপেক্ষা ও না পাওয়ার বেদনা গুলো পুঞ্জিভূত হয়েছে দুর্গার জন্য ।দুর্গা চরিত্রের সৃষ্টি হয়েছে অপুর বিকাশে সহযোগী চরিত্র হিসেবে। উপন্যাসিক সে উদ্দেশ্য সাধনের জন্য দুর্গাকে একসময় চিরতরে বিদায় করে দিয়েছেন ।
দুর্গা বড়ই দুঃখী মেয়ে। স্বর্ণের সিঁদুর চুরি করে সেজো বউ এর শাস্তি ভোগ করেছে ।পুতির মালা চুরি করে মায়ের হাতে মার খেয়েছে ।অপুর সঙ্গে মারামারি করলেও সেই মায়ের হাতের মার খেয়েছে।
এরকম দুখিনী অসহায় শত শত দুর্গা আমাদের আশেপাশে প্রতিনিয়ত দেখা যায়। প্রতিকী চরিত্র রূপে এই দুর্গা গ্রাম বাংলার সমস্ত কিশোরী এর পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থাপিত হয়েছে ।
পথের পাঁচালী উপন্যাসের অপু চরিত্র :
পথের পাঁচালীর কেন্দ্রীয় চরিত্র অপু ।অপুর মত এত প্রকৃতিপ্রেমী ও আকর্ষিত চরিত্র বাংলা উপন্যাসে দ্বিতীয়টি নেই ।পথের পাঁচালী উপন্যাসে অপুর জন্ম ও বেড়ে ওঠার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে ।কাহিনীর মধ্যে অপুর প্রকৃতি পছন্দ ,বিশ্বাস বা আনন্দ-বেদনার বিচিত্র উপহার লেখক জারিত করেছেন ।
স্বভাবে লাজুক ও মুখো চোরা প্রকৃতিপ্রেমিক বড় দুঃখ কাতর জ্ঞানপিপাসু ও কল্পনাপ্রবণ কৌতুহল প্রবন গান-বাজনা ও সঙ্গীত পিপাসু অভিমানী সর্বোপরি মাতৃভক্ত বালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ তার চরিত্র ও ব্যক্তিত্বের কাঠামো গ্রহণ করেছে
অপুর মধ্যে পর দুঃখ কাতরতা ছিল প্রবল। সে নিজেও দুঃখ দারিদ্র্য পূর্ণ সংসারের জাতক।
সর্বজয়া কর্তৃক প্রহৃত হয়ে দূর্গা সন্ধ্যার আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। অপু দিদি কে খুঁজে না পেয়ে মনোরথ হয়ে বসে থাকে ।সর্বজয়া ছেলের মুখে দুধের বাটি লাগিয়েও খাওয়াতে পারল না্ এসময় অপু ডুকরে কেঁদে উঠে বলেছে,
”দিদির জন্য বড্ড মন কেমন করছে “
গঙ্গানন্দপুর অপুর পিসিদের বাড়ি এসে এখানে গুলকির সঙ্গে তার ভাব হয়। গুলকি এতিম। দুঃসম্পর্কের জেঠির কাছে থাকে। কারণে-অকারণে গুলকি মার খায়্ চৌধুরী বাড়িতে যাওয়া নিয়ে গুলকিকে বেদম প্রহার করে ওর জেঠি। এতে অপু বেদনাহত হয় ।অপুর মনটা আকুলি-বিকুলি করিতেছিল।
”চোখের জলে গলা আরষ্ঠ হওয়ার দরুন কোন কথা মুখ দিয়া বাহির হইল না ”
অপুর জ্ঞানপিপাসা ও কল্পনাপ্রবনতা উপন্যাসের মধ্যে প্রকটিত।মায়ের কাছে মহাভারত শুনেছে, বাবার বইয়ের যে বাক্স আছে সেগুলো মাঝে মাঝে খুলে বইপত্র নাড়াচাড়া করে ।
এখানে ওখানে গিয়ে ও বই পড়তো। শকুনির ডিম সংগ্রহ করে সে আকাশে ওড়ার কল্পনা গ্রহণ করেছে। বাবার মতো বঙ্গবাসী খবরের কাগজও আনন্দ আগ্রহের সঙ্গে পাঠ করেছে। অপু নিজেই একদিন একটা গল্প লিখে ফেলেন ।গল্প লেখা, বই পড়া, গান-বাজনা করা ছিল তার নিত্যদিনের শখ ।
অপু চরিত্রের সবচেয়ে বিশেষত্ব জ্ঞাপক দিক হচ্ছে প্রকৃতির প্রতি অসীম অনুরাগ ।
প্রকৃতির পানে চেয়ে আনন্দিত হওয়া বা পুলকিত হওয়ার মধ্যে বালক অপুর স্বতঃস্ফু্ত একটা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। নিশ্চিন্দিপুরের দারিদ্রতা কাটিয়ে ভালো জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে সর্বজয়া অপুকে নিয়ে কাশিতে চলে যায় ।
এই অপূর্ব সুন্দর গ্রাম ও তার মৃত দিদিকে রেখে কিছুতেই কাশিতে যেতে মন চাচ্ছিল না অপুর ।
বাহিরের দুর্বিষহ জীবন কাটিয়ে সর্বহারা সর্বজয়া আর অপু আবার যখন নিশ্চিন্দিপুর আসতে থাকে তখন অপুর আর সয়না ।মন শুধু আকুলি-বিকুলি করতে থাকে ।তখন পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন –
”মূর্খ বালক পথ তো আমার শেষ হয়নি ,পথ আমার চলে গেল সামনে, সামনে, শুধুই সামনে……..
সে পথের বিচিত্র আনন্দ যাত্রার অদৃশ্য তিলক তোমার ললাটে পরিয়েই তো তোমায় ঘরছাড়া করে এনেছি । চল এগিয়ে যায়।”
একথা দ্বারা বোঝা যায় পথের পাঁচালীতে অপুর জীবন অসমাপ্ত। তার জীবনের পূর্ণতা পেতে আমাদের পড়তে হবে অপরাজিত উপন্যাস।
উপসংহার :
প্রকৃতিকে বহুধা বর্ণিল অবয়বে উপস্থাপন করে বিভূতিভূষণ তার পথের পাঁচালীতে কিছু চরিত্রের মাধ্যমে যেভাবে গ্রাম বাংলার সমস্ত মানুষের সুখ-দুঃখের প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন তা সত্যিই অনন্য ও অহংকারের দ্যোতক। বিশেষ করে প্রকৃতি ও মানবমনের অসাধারণ সম্পর্ক স্থাপন করে বিভূতিভূষণ যা করেছেন তা অবিস্মরণীয় ।
পথের পাঁচালী উপন্যাস সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করুন এখানে-
বাংলা সাহিত্যের আরো বিষয় জানতে ক্লিক করুন এখানে-